রক্ষিতার দেহ বন্টন বিষয়ক চুক্তি ও কনফেকশনারী দোকানির দেনা পরিশোধ

 সিন্ড্রেলা । এই সেই সিন্ড্রেলা যাকে নিয়ে এর আগেও লিখেছিলাম । শ্যাম বর্ণের সিন্ড্রেলা । কোকড়ানো চুল । টানা টানা চোখ । বাধানো দেহে যৌবনের ভরা বর্ষা ।  অতৃপ্ত সিন্ড্রেলা । অশরীরি সিন্ড্রেলা । এই গাছ থেকে ঐ গাছ খুঁজে ফেরে ওর চাওয়া গুলো কে । ও তৃপ্ত হতে যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত । কলকাতার অদূরে অজ পাড়াগাঁয়ের মেয়ে হলেও আধুনিকতা ওর সারা শরীর কে গ্রাস করেছে । ও তেমন মেয়েই নয় যারা শরীরের স্বাধীনতা পায় না । স্বাধীনচেতা সিন্ড্রেলা শরীর কে অন্যের পণ্য হতে দেয় নি । বরং নিজেই পণ্য বানিয়েছে অনেক কে । অতৃপ্ত আত্মা এদিক সেদিক ঘুরতে ঘুরতে এক দিন নজরে পড়ে যায় গল্পের কনফেকশনারী দোকানির । দোকানি সুদর্শন ,চোখে মায়া । স্ত্রী আর দুই কন্যা নিয়ে সুখের বাগান । তবুও কিসের অনুভূতি আর কোকড়ানো চুলের ঘ্রানে সিন্ড্রেলা কে ভালো লেগে যায় দোকানির । সেই ভাল লাগার গল্প শুনে আসি । 

দোকানির বাসার পাশেই একটা ছাত্রী হোস্টেলে থাকতো সিন্ড্রেলা । নিত্য পণ্যের সমাহার যে দোকানে সেখানে তো প্রতিবেশী আসবেই । রমরমা ব্যাবসা দোকানির । কিছু দূরেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাঁখা ক্যাম্পাস । 

কোনো এক দুপুরে সিন্ড্রেলা ওয়াশরুমে গিয়ে দেখলো চুলে দেয়া শ্যাম্পু শেষ হয়ে গেছে । ভাবলো বাসার নিচেই দোকান ,কিনে আনি ।

দোকানে বসে আছে সুদর্শন দোকানি । সিন্ড্রেলা এসে পছন্দের ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু চাইতে দোকানি সিন্ড্রেলার দিকে তাকিয়ে কেন যেন অবাক হয়ে গেলো । এ কেমন মায়া ভরা চোখের চাহনি !!!

এই কোকড়ানো চুল দোকানির মনে রোমাঞ্চের ঢেউ তুললো । নিজের স্ত্রী কেও হয়তো এভাবে কোনদিন দেখেনি । সুন্দর ,ফর্সা স্ত্রী কে বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই ভালো লাগছিলো না প্রেমিক দোকানির । 

যাইহোক,হ্যা শ্যাম্পু আছে । এই বলে সিন্ড্রেলার হাতে প্যাকেট দিতে দিতে বলল , কি নাম আপনার ?

>সিন্ড্রেলা ।

আপনার ?

>আমি পলাশ

পলাশ জিজ্ঞাসা করল,

কি করেন আপনি ? এখানে কোথায় থাকেন ? 

>সিন্ড্রেলা মুচকি হেসে উত্তর দিলো,সব যদি আজকেই জানতে চান তাহলে কিভাবে হবে?

>ঠিক বুঝলাম না । কি হবে?

সিন্ড্রেলা বুঝতে পারলো ওর অতৃপ্ত আত্মা পলাশ কে ধরে ফেলেছে ।

আর দেরি না করে ,ছোট কাগজে ফোন নাম্বার টা লিখে দিয়ে ছুটে চলে এলো বাসায় ।


এইভাবে বেশ কিছুদিন দুই জন দুই জনের কথা ভাবতে ভাবতেই সময় চলে যায় । সিন্ড্রেলার কাজে মন বসে না । সিন্ড্রেলা অনেক আগে থেকেই এক রকমের এতিম । থাকার জায়গা বলতে কলকাতার এক নামকরা নার্সিং হোমের ছাত্রী হোস্টেল । আর পলাশের ভাড়া বাসায় স্ত্রী আর দুই কন্যা নিয়ে সংসার । পলাশ এখন স্ত্রী খুব বেশি সময় দিতে চায় না । কেন যেন সব সময় ঐ টানা টানা চোখ আর শ্যমবর্ণের কোকড়ানো চুলের ছায়া ভেসে ওঠে পলাশের চোখে । 

নাহ !! এভাবে আর না । বলতেই হবে । বলে দিতেই হবে । সিন্ড্রেলাও মনে মনে চাচ্ছিলো পলাশ নিজে থেকে ওকে ডাকুক ।বলে দিক মনের গোপন ইচ্ছা । সিন্ড্রেলা জানে ও অতৃপ্ত । নিজেকে ধরে রাখতে এক রকম কষ্টই লাগছিলো । অফিসের বিশেষ দিনের অনূষ্ঠানে সিন্ড্রেলা কে শাড়ি পড়তে হলো । কলিগের ক্যামেরায় নিজেকে দেখে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেলো । এতো সুন্দর আমি !!

আর দেরি নয় । আজই পলাশের সামনে যাবো । ও যদি সত্যিই সু পুরুষ হয় তবে ও আমাকে ওর মনের কথা বলে দেবে । 

যেই কথা সেই কাজ । সিনিঃ দিদি দের কে বলে কিছু সময়ের জন্য সিন্ড্রেলা কনফেকশনারী দোকানের সামনে গেল । নাহ এখনও দোকান খোলে নি কেন ? মনে অজানা আতংক ভর করল । তাহলে কি পলাশ আজ আমাকে দেখবে না ?

ভাবতে ভাবতেই বেশ কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে থাকলো দোকানের সামনে । কিন্তু সিন্ড্রেলা হেরে যাবার মেয়ে নয় । দূর থেকে পলাশ দেখতে পেলো ও পায়ে হেটে দোকানের দিকেই আসছে । পলাশ যত কাছে আসছে সিন্ড্রেলা ততই ভয় ,লজ্জা আর রোমাঞ্চে শিহরিত হচ্ছে । 

চলবে..................

Post a Comment

0 Comments