বাকরখানির সঙ্গে একটি প্রেমের গল্প

_______________________________________________

বাকরখানি ময়দা দিয়ে তৈরি রুটি জাতীয় খাবার বিশেষ। এটি বাংলাদেশের পুরান ঢাকাবাসীদের সকালের নাস্তা হিসাবে একটি অতি প্রিয় খাবার। ময়দার খামির থেকে রুটি বানিয়ে তা মচমচে বা খাস্তা করে ভেজে বাকরখানি তৈরি করা হয়। ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের বাকরখানি পাওয়া যায় পুরান ঢাকায়।

ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, বাকরখানি তৈরির পেছনে রয়েছে এক ব্যর্থ প্রেমকাহিনী। আগা বাকের নামের তুর্কিস্তানের এক ভাগ্যবিড়ম্বিত বালক ক্রীতদাস হয়ে এসেছিল এ দেশে। বাংলার সুবেদার নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁ তাকে কিনে নিয়েছিলেন। বাকেরের বুদ্ধিমত্তায় মুগ্ধ হয়ে নবাব তাকে লেখাপড়া ও সামরিকবিদ্যায় সুশিক্ষিত করে তোলেন। এরপর দীর্ঘ সময় তিনি বাকলা চন্দ্রদ্বীপের শাসনকর্তা ছিলেন। তার নামানুসারে বাকেরগঞ্জ (পরে বরিশাল) জেলার উৎপত্তি।



আগা বাকেরের প্রেমকাহিনি নিয়ে অনেক গল্প প্রচলিত। বাকের ভালবেসেছিলেন নর্তকী খনি বেগমকে। তার প্রেমের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন উজির জাহান্দার খাঁর ছেলে কোতোয়াল জয়নুল খাঁ।

সুবেদার নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁ এই দ্বন্দ্বের সূত্র ধরে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে বাকেরকে বাঘের খাঁচায় নিক্ষেপ করেছিলেন। শক্তিধর কৌশলী যোদ্ধা বাকের ওই বাঘকে হত্যা করে খাঁচা থেকে বীরদর্পে বেরিয়ে এসেছিলেন। এদিকে খনি বেগমকে নিয়ে দুর্গম এক দ্বীপে পালিয়ে গিয়েছিলেন জয়নুল খাঁ। আগা বাকের প্রেমিকাকে উদ্ধারে রণসাজে চন্দ্রদ্বীপে উপস্থিত হলে জয়নুল খাঁ খনি বেগমকে হত্যা করে নিজেও আত্মঘাতী হন। খনি বেগমকে না পেলেও প্রেমের স্মৃতি ধরে রাখতে বাকের নতুন ধরনের শুকনো রুটি তৈরি করে নাম দেন বাকের-খনি। ক্রমে যা ‘বাকরখানি’ হয়ে গেছে।

________________________________________________


Post a Comment

0 Comments